গোমরাহী বলতে কি বুঝায়? মানুষ কিভাবে গোমরাহ হয়ে থাকে?
‘গোমরাহ’ শব্দের অর্থ পথভ্রষ্ট। ইসলামের পরিভাষায় যাদের কাছে হেদায়েতের আলো পৌঁছেনি অথবা পৌছা সত্ত্বেও যারা এর দ্বারা তাদের অন্তরকে আলোকিত করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে গোমরাহ্ বলা হয়। সুতরাং গোমরাহ্ অর্থ আল্লাহ এবং তার মনোনীত বা নির্দেশিত পথ সম্পর্কে জ্ঞানশূন্যতা, আর এভাবে মুক্তির পথ সম্পর্কে অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিপতিত থাকা। গোমরাহী- অন্ধকার এবং হেদায়েত- আলোকময়। তাই মানুষকে গোমরাহীর অন্ধকার থেকে উদ্ধার করে আলোকময় পথের সন্ধান দিতে যুগে যুগে আল্লাহ পৃথিবীতে নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন।
নিপুণ মানুষকে আত্মাহর নৈকট্য লাভের শক্তি যোগায়। যে পরমাত্মার অধীন হয়, সে পরমাত্মা তথা আল্লাহর নির্দেশে পরিচালিত হয়। তার জীবাত্মায় পরমাত্মার বৈশিষ্ট্য বিকশিত হয়, অর্থাৎ ওই ব্যক্তির চরিত্রে আল্লাহর গুণাবলী বিকাশ লাভ করে এবং ক্রমান্বে সে আল্লাহর প্রতিনিধির পর্যায়ে উন্নীত হয়। এভাবে জীবাত্মা কর্তক পরমাত্মার দাসত্বের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর খলিফায় পরিণত হয়।
যে মানুষ আল্লাহর খলিফায় পরিণত হয়, তাঁর যাবতীয় কাজ আল্লাহর নির্দেশ বা ইচ্ছানুসারে হয়ে থাকে। এজন্য তিনি যে কোন কাজ করেন, তা ইবাদতের মধ্যে শামিল হয়। পক্ষান্তরে, যার জীবাত্মা পরমাত্মার আনুগত্য স্বীকার করেনি, সে নিজেকে যতই আল্লাহর বান্দা বলে বা মানুষ বলে দাবী করুক, চরিত্রের প্রকৃত বৈশিষ্ট অনুযায়ী সে পাপাচারী এবং সে অন্য নিকৃষ্ট জীব তুল্য। এ অবস্থায় সে যতই ইবাদত বন্দেগী করুক না কেন, সেটা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না বিধায় তার ইবাদত বাহ্যিক আচার অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।
সুতরাং জীবনভর এরূপ ইবাদত করেও কোন শান্তি এবং মুক্তি লাভ হবে না। মুক্তি পেতে হলে, ইবাদতকে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। এজন্য কোন মহামানবের সান্নিধ্যে গিয়ে জীবাত্মাকে পরমাত্মার অধীন করার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।।
আপনার মতামত লিখুন :