—————————————————————————————————————————————————-
☛ কুল ইন্নামা আনা বাশারুম মিছলুকুম
☛ অর্থ:- হে আমার হাবিব বলুন আমি তোমাদের মতই একজন বাশার (মানুষ) কিন্তু আমার নিকট ওহী আসে। (সুরা কাহাফ – ১১০)
☛ এখানে নবীজিকে বাশার বলা হয়েছে বাশার আর ইনসান এক নয়।
☛ বাশার অর্থ নমুনা, চামড়া, আবরণ, আকৃতি ইত্যাদি।
☛ ইনসান শব্দের অর্থ: মানুষ। এখানে নবীজিকে বাশার বলেছেন ইনসান নয়।
☛ কুরআন শরীফে জিব্রাঈল (আঃ) এর শানেও বাশার শব্দ ব্যবহার হয়েছে যেমন:।
ফা আর সালনা ইলাইহা রুহানা ফাতামাছ্ছালা লাহা বাশারান ছাউইয়া।
অর্থ: আমি তার কাছে আমার রুহ (জিব্রাঈল) প্রেরণ করলাম। সে পূর্ণ মানব আকৃতিতে প্রকাশ হলো। ( সুরা মরিয়ম – ১৭)
☛ বাশার যদি মানুষ হয় জিব্রাঈলকেও মানুষ বলতে হবে
☛ নবীজি নম্রতা ও আজিজি প্রকাশ করতে বলেছেন আমি কোন জ্বীন নয়, ফেরেস্তাও নয় আমি তুমাদের মত বাশার (মানুষ)।
☛ যেমন: আদম (আঃ) আল্লাহর নিটক বললেন:
রাব্বানা জলাম না আনফুছানা
অর্থ: হে আল্লাহ আমি জুলুম করেছি নিজের প্রতি। ( সুরা আরাফ ২৩)
☛ এখানে আদম আঃ আল্লাহর কাছে জালেম বলে পরিচয় দিয়েছেন এটা ছিল আজিজি কিন্তু উম্মতেরা আদম (আঃ) কে জালেম বলতে পারবে না বরং নবী বলতে হবে।
☛ যেমন: ইউনূছ আঃ আল্লাহর নিটক বললেন:
ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন
অর্থ: আমি জালিমদের অন্তভূক্ত ছিলাম ( সুরা আম্বিয়া ৮৭)
☛ এখানে ইউনূছ নবী আল্লাহর কাছে আজিজি – নম্রতার সহিত জালিম বলে পরিচয় দিয়েছেন কিন্তু আমরা কি জালিম বলতে পারব? বললে ঈমান থাকবে না সুতরাং বুঝা গেল আমরা ইউনূছ (আঃ) কে নবী বলতে হবে।
☛ যদিও আদাম (আঃ) ও ইউনূছ (আঃ) আল্লাহর কাছে আজিজি নম্রতার সহিত নিজেকে জালেম বলে পরিচয় দিয়েছেন কিন্তু আমরা জালেম বলতে পারব না, ঠিক তেমনিভাবে নবীজিও কাফেরদের অপ-প্রচারের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন আমি জ্বীন নয় ফেরস্তাও নয়, আমি তোমাদের মত বাশার (মানুষ) কিন্তু আমরা বলতে পারব না।
☛ আরেকটি লক্ষনীয় বিষয়: আমার কাছে ওহী আসে তোমাদের কাছে ওহী আসে না। এ থেকেও প্রমাণীত হয় নবী আমাদের মত নয়।
☛ কুল এর পরে ইন্নামা শব্দ এসেছে একমাত্র অর্থ দেওয়ার জন্য। ইন্নামা দ্বারা শুধু একমাত্র নবীজিই বলতে পারবেন অন্য কেহ নয়।
☛ মিসলুকুম অর্থ: তোমাদের মত । মত দ্বারা নিষেধ করা হচ্ছে যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, যায়েদ বাঘের মত। তাহলে কি যায়েদ ভাগ হয়ে গেল? না বরং যায়েদের সাহস ও শক্তি দেখে বলা হয়েছে যে, যায়েদ বাঘের মত মূলত যায়েদ বাঘ নয় বরং বাঘের মত সাহসী একজন মানুষ।
☛ আরেকটি উদাহরণ দেখাযাক: আপনাকে অপরিচিত কেহ যদি বলে যে, আপনি আমার ভাইয়ের মত । অথচ তাকে আপনি চিনেন না। দেখতে যদিও আপনি তার ভাইয়ের মত মূলত আপনি ভাই নয়। যদি ভাই হতেন তাহলে মত কথা ব্যবহার হত না বরং এভাবে বলা হত আপনি আমার ভাই। ঠিক নবীজিও দেখতে আমাদের মত নমুনা ছিলেন কিন্তু হাকিকতে নবী আমাদের মত নয় তিনি অতুলনীয়, নূরে মুজাচ্ছাম।
☛ ☛ সর্বশেষ কথা:- মনে করিয়ে দিচ্ছি শত বুঝানোর পরও হাজারো দলীল দেওয়ার পরও, নবীগণকে মানুষ বলত কাফেরেরা।
যেমন আল্লাহ বলেন
☛ কালু মা আনতুম ইল্লা বাশারুম মিছলুনা
অর্থ: তারা বলত আপনি তো আমাদের মত মানুষ ছাড়া অন্য কিছু নয়। ( সুরা ইয়াসিন ১৫)
এমনকি আল্লাহ বলেন: নবীগণকে আমাদের মত সাধারণ মানুষ বললে তারা ক্ষতিগ্রস্থ (ধ্বংশ) হবে।
ওলা ইন আতা’তুম বাশারাম মিছলাকুম ইন্নাকুম ইজাল লাখাছিরুন।
অর্থ: তুমরা যদি তুমাদের মত কোন মানুষের অনুস্বরণ করো তাহলে ক্ষতিগ্রস্থ (ধ্বংশ) হবে। ( সুরা মু’মিনুন ৩৪)
☛ অতএব, মূলকথা হচ্ছে নবীজি কারো মত নয়।
হাদিস শরীফে আছে আইয়্যুকুম মিছলী
অর্থ: আমার মত পৃথিবীতে কে আছে?
লাসতুকা আহাদু মিনকুম
অর্থাৎ: আমার মত পৃথিবীতে কেহ নেই। ( বোখারী ১/২৬৩পৃ.)
► লিখক : তরিকত ও তাছাউফ গবেষক, রেজভীয়া দরবার শরীফের খলিফা
► পীর গাজী হাবিবুর রহমান রেজভী সূফিবাদী।
► পীর সাহেব : রেজভীয়া হাবিবিয়া দরবার শরীফ, গোয়াতলা, কটিয়াদি, কিশোরগঞ্জ।
হুজুরের সাথে যোগাযোগঃ- 01715-261408
আপনার মতামত লিখুন :