মারিফত বা আধ্যাত্মিক বিষয় কোন নতুন মতবাদ নয়, ইহা কুরআন ও হাদিস ভিত্তিকই একটি মতবাদ, শরীয়তের যেমন দলিল আছে তেমনি মারিফতের ও কুরআন হাদিস ভিত্তিক দলিল আছে,
আত্মা ও দেহের সমন্বয়ে মানুষ সৃষ্টি।
তেমনি শরীয়ত ও মারফতের সমন্বয়ে ইসলাম সৃষ্টি।
শরীয়ত হল দেহ, মারিফত হলাে প্রাণ।
প্রাণ ছাড়া দেহের যেমন কোন মূল্য নেই
তেমনি মারিফত ছাড়া ইসলামের মূল্য নেই।
মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে বলেন, “লিকুল্লি জায়ালনা মিনকুম শিরআতাও ওয়ামিনহাজ” -অর্থ: প্রত্যেকের জন্য দুটি পথ দিয়েছে একটি শরীয়ত আর অন্যটি হলাে (মিনহাজ) খাস পথ বা মারেফত। (সূরা মায়িদা আয়াত-৪৮) হাদীস শরীফে নবীজি বলেছেন, “ইন্নাল মারিফাতু ফি’লুল কালবী”- অর্থ: নিশ্চই মারিফত হলাে ক্বলবের কাজ। | (বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, ৭ পৃষ্ঠা)
হযরত গাউছে পাক আবদুল কাদির জিলানী (রা) বলেন, ইলমে মারিফত ছাড়া খােদার দীদার পাওয়া সম্ভব নয়, তিনি আরাে বলেন, শরীয়ত কচুপাতার পানির ন্যায় পাতলা, আর মারিফত হলাে গাঢ় এবং মজবুত। (সিররুল আসরার)
ইলমে তাছাউফ নামক কিতাবে, হযরত খাজা মুহাম্মদ ছাইফুদ্দিন নকশে বন্দী মােজাদ্দেদী (রহ) লিখেন মারিফত ব্যতিত যদি কেহ হাজার বছর ধরে ও আল্লাহর ইবাদত করে তবু তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।
মারিফত বা আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমেই শরীয়তের উৎপত্তি। আমাদের প্রিয়নবী ও দীর্ঘ ১৫ বছর হেরা গুহায় আধ্যাত্মিক ধ্যান সাধনার মাধ্যমেই পূর্ণাঙ্গ ইসলামের আবির্ভাব, প্রথমেই মারিফতের সাধনা তার পর শরীয়তের উৎপত্তি, স্পষ্ঠ বুঝা গেল, মারিফতের পরে শরীয়তের সৃষ্টি, ধ্যান হলাে মারিফতের মূল অস্ত্র।
মারেফত শব্দটি আরাফ থেকে যার অর্থ চিনা, জানা বা নৈকট্য পাওয়ার জ্ঞান। আল্লাহর হাবিব নবী হেরা গুহায়, ধ্যানের মাধ্যমেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং কোরআন অবতীর্ণ হবার পর শরীয়তের সৃষ্টি, তাই বুঝা গেল মারেফত বা আধ্যাত্মিক বিষয় বস্তু হলাে, শরীয়তের আগে।
ইলমে মারেফতের কয়েকটি নাম:- ১। ইলমে মারেফত ২। ইলমে তরিকত ৩। ইলমুল কুলব ৪। ইলমুল আসরার ৫। ইলমুল বাতেন ইত্যাদি।
লিখক: তরিকত ও তাছাউফ গবেষক, রেজভীয়া দরবার শরীফের খলিফা
মাওলানা গাজী হাবিবুর রহমান রেজভী সুফিবাদী
পীর সাহেব: রেজভীয়া হাবিবিয়া দরবার শরীফ, গোয়াতলা, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ।
আপনার মতামত লিখুন :