কালিমা দর্শন


তরিকত ফাউন্ডেশন প্রকাশের সময় : আগস্ট ২০, ২০২২, ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ /
কালিমা দর্শন

কালিমা দর্শন

কালিমা বলতে আমরা সাধারণত কালিমা তাইয়্যেবাকে বুঝি। যদিও আরও অনেক কালিমা রয়েছে। তথাপিও কালিমা তাইয়্যেবা মূল কালিমা। এর মধ্যে ২৪টি হরফ বা অক্ষর রয়েছে।

কালিমাটি নিম্নরূপঃ

لا إله إلا الله محمد رسول الله

(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)।

অর্থঃ আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন উপাস্য নেই, হযরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল। কালিমা তাইযয়্যেবা-তে দুটি অংশ। যথাঃ তাওহীদ ও রিসালাত। প্রথম (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ)-তে ১২টি অক্ষর, ইহা তাওহীদ এবং (মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)-তে ১২টি অক্ষর, ইহা রেসালাত। 

লক্ষ্যণীয় যে, কালিমাতে কোন নুক্তাযুক্ত অক্ষর নাই। তাওহীদের (আল্লাহর) ১২টি অক্ষর যেমন নুক্তা ছাড়া তেমনি রিসালাতের (রাসূলের) ১২ টি অক্ষর নুক্তা ছাড়া। এতে বোঝা যায়ম যে, স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ তায়ালার যেমন কোন শরিক নাই, তেমনি সৃষ্টি হিসেবে নবীজিরও কোন শরীক নাই অর্থাৎ তার সাথে কোন সৃষ্টির তুলনা চলে না। আরও প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তায়ালা তার নিজ গুণে আমার নবীজিকে সৃষ্টি করেছেন। কেননা আল্লাহর তাওহীদের ১২টি অক্ষরের মধ্যে যেমন কোন নুক্তা নাই, তেমনি আমার নবীজির রিসালাতের ১২টি অক্ষরের মধ্যে কোন নুক্তা নাই। 

কালিমাতে ১২+১২= ২৪ টি অক্ষর। ১২টি অক্ষর আল্লাহ তায়ালার এবং ১২টি অক্ষর রাসুলের। এবার আমরা আধ্যাত্মিক তালিমে পাই ৫টি জাত এবং সাতটি সিফাত অর্থাৎ ৫+৭ = ১২। এতে প্রমাণিত হয় যে, কালিমাতেও ৫টি জাত এবং ৭টি সিফাত রয়েছে। যে কালিমা দেখা যায় কেবল মাত্র সেই কালিমাতে ৫টি জাত এবং ৭টি সিফাত বিদ্যমান রয়েছে। কেননা যা দেখা যায় তা পড়াও যায়। সুতরাং কালিমা দেখার বিষয় ইহা অস্বীকার করার নয়। কেননা আদম আলাইহিস সালাম আরশে কালিমা দেখতে পেয়েছিলেন। 

এবার কালিমার অর্থের দিকে লক্ষ্য করি। কালিমা অর্থ বাণী বা বাক্য। আর তাইয়্যেবা অর্থ পবিত্র। তাহলে কালিমা তাইয়্যেবা অর্থ দ্বারায় পবিত্র বাক্য। পবিত্র মুখ হতেই কেবল পবিত্র বাক্য বের হয়, অপবিত্র মুখ হতে নয়। আবার বাক্য হতে মুখ আলাদা নয় অর্থাৎ মুখ বাক্য নয়, কিন্তু মুখ ছাড়া। বাক্য হয় না। তাই কালিমার একটা নক্সা আছে, যা দেখা যায়। কালিমার গুপ্তভেদ আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন। কালিমার সূরত জানা দরকার। গুরু তথা পীরের নিকট হতে তালিম নিয়ে কালিমার ভেদ অবশ্যই জানা প্রতিটি মানুষের ঈমানী দায়িত্ব।